সিলেট ডেস্ক :– মহামারীর এই ক্রান্তিকালে আমি সকলের সাথে হৃদমাঝারে জমানো ক্ষোভময় কষ্ট শেয়ার করতে চাই |আশা করি সকলেই জানেন প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির সকল স্টুডেন্টদের উপর নেমে এসেছে করোনা থেকেও আত্মঘাতী দুশ্চিন্তা নামক ভাইরাস অনলাইনের অসুস্থ শিক্ষাকার্যক্রম” এর জন্যে দায়ী | বিপর্যস্ত এই সময়ে স্টুডেন্টরা আমরা এক সেকেন্ডের জন্যেও স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছিনা ,প্রতিমুহূর্তে মনে হচ্ছে দমবন্ধ হয়ে মারা যাবো পাষণ্ড এই অনলাইনের শিক্ষাব্যবস্থার প্রেশারে | যেখানে লাখলাখ মানুষ করোনাতে আক্রান্ত হয়ে চিরতরে না ফেরার দেশে পাড়ি জমাচ্ছে , সেখানে ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেখার জন্যে প্রতিনিয়ত প্রেশার ক্রিয়েট করা অমানবিক মানসিক অত্যাচার নামক বিলাসিতা নয় কি ?
#শিক্ষার্থী যারা গ্রামে গিয়েছে কিংবা শহরে আছে তারা সুস্থ আছে কিনা বা তাদের পরিবারের সদস্যরা সুস্থ আছে কিনা UGC এর কেউ খোঁজ নিয়েছেন বা জানতে চেয়েছেন !! হতেও তোহ পারে অনেক শিক্ষার্থী তাদের আপনজনকে এই দানব করোনার থাবা থেকে বাঁচাতে পারেনি দিনশেষে মানসিকভাবে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে ভেঙ্গে জিন্দালাশ হয়ে আছে তারা কিভাবে এখন পড়ালেখায় মন বসাবে অনলাইনের এক্সাম তোহ পরের ব্যাপার !!!
#নিম্নবিত্ত পরিবারের সাথে পরিস্থিতির শিকার হয়ে হাজারো মধ্যবিত্ত পরিবার এখন ত্রাণের জন্যে ছটফট করছে কিন্তু রাস্তায় নামতে পারছেনা কারন যদি হুট করে ক্যামেরাবন্দি হয়ে যায় তখন লজ্জায় আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবেনা |দুমুঠো ভাতের যোগান দিতে পারছেনা যেখানে অধিকাংশ অসহায় পরিবার সেখানে পরবর্তী সেমিস্টারের জন্যে পাহাড়সমান অর্থ কিভাবে তারা সন্তানের জন্যে জোগাড় করে দিবে ?? মধ্যবিত্ত , নিম্নমধ্যবিত্তের সন্তানদেরই কিন্তু মাবাবা অনাহারে থেকে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি করে ভবিষ্যতের কথা ভেবে ! মনে রাখবেন শিল্পপতি , রাজার সন্তানেরাই শুধু প্রাইভেটে পড়েনা ! বহু অসহায় ছেলেমেয়ে পার্ট টাইম জব করে নিজের খরচ নিজে চালায় , টিউশনি করে রাতদিন খেটে পড়ালেখার খরচ চালায় এখন তোহ সবকিছুই বন্ধ তোহ ছেলেমেয়েগুলা কি মা-বাবার কিডনি বেঁচে সেমিস্টারের টাকা পরিশোধ করবে ? কিছুকিছু ইউনিভার্সিটি দেখলাম নির্দিষ্ট তারিখ ও দিয়ে দিয়েছে টাকা পরিশোধের ধিক্কার জানাই রক্তচোষা সেইসব ইউনিভার্সিটিকে যাদের মাঝে নূন্যতম মায়ামমতা নাই | দিনদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কসাই হয়ে গিয়েছে আপনারা কি চান ছাত্রছাত্রীরা তাদের আপনজনদের রক্তবেচে ইউনিভার্সিটির সেমিস্টার ফি জোগাড় করুক ? পাষণ্ড মনে কি বিন্দুমাত্র মায়ার বীজ বপন করতে পারেন না যারা ছাত্রছাত্রীদের অনবরত প্রেশার দিয়েই যাচ্ছেন ?
#পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেই ছেলেমেয়েরা ঠিকমতো পড়াশুনা করেনা আর এমন দুর্যোগকালীন সময়ে বইখাতার ধারেকাছে যাবে এইসব ভাবনা আসে কই থেকে ! যেই মালিক আমাদের সৃষ্টি করেছে তার দেওয়া জীবনবিধান থেকে লোক সরে গিয়েছে বলেই এতবড় আজাব এইটা কি মাথায় আসেনা ! কোথায় অনুপ্রেরণা দিবেন ছাত্রছাত্রীরা যাতে সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানী কিতাব “কোরআন “পাঠ করে অর্থ বুঝে , খতম দিতে পারে তা তোহ নাই উল্টা অমানবিকতার শীর্ষে পৌঁছে গিয়েছে আপনাদের অত্যাচার | প্রত্যেকটা মানুষের এখন বেশিবেশি আল্লাহকে ডাকতে হবে কারন কখন কে আক্রান্ত হয়ে পরপারে চলে যায় বলা যায়না তোহ এই দুশ্চিন্তা নিয়ে এমনিতেই মানুষের মনমেজাজ খারাপ থাকবে পড়ালেখায় মনোযোগ আসবে কিভাবে ঠান্ডা মাথায় ভাবুন তোহ ? পোলাপান যদি নিশ্চিন্তে প্রস্তুতিই না নিতে পারে তাহলে তারা কি পরীক্ষা দিবে ?তারা কি চাচ্ছে ৯০% স্টুডেন্ট ফেইল করে রিটেক নিক আর তারা পাহাড়সমান ইনকাম করুক ??? এমন পাশবিক নির্যাতন কিভাবে করছে !!! এই দুশ্চিন্তার বোঝা বহন কিন্তু শুধু ছাত্রছাত্রীরা একাই বহন করছেনা পুরো পরিবারের মানুষকে এই অত্যাচার তিলেতিলে চিন্তার বারুদ দিয়ে নীরব খুনির মতো মেরে ফেলছে | ভাইরাস নিয়ে মানুষ কি ভাববে শিক্ষাব্যবস্থার এই সিস্টেমের শোষণেই তোহ আধামরা হয়ে জিন্দালাশ হয়ে বেঁচে আছে লাখো শিক্ষার্থী |
#প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিগুলো কি একবার ও ভাবতেছে যে ছাত্রছাত্রীদের শোষণ , নিপীড়ন সহ্য করতে করতে যখন দেয়ালে পিঠ থেকে যাবে তখন যে তারা প্রচুর স্টুডেন্ট হারাবে ?? পড়ালেখা তোহ এখন সম্পূর্ণ ব্যবসার ফাঁদে ফেঁসে গিয়েছে যার ফলে উচ্চশিক্ষিত মানুষের মনুষ্যত্ব অন্যায়ভাবে টাকা অর্জনের দেশে হারিয়ে গিয়েছে | সত্যিই এখন আফসোস হয় যে কেন আমরা ভুক্তভুগীরা জেনারেল লাইনে পড়ালেখা করলাম তার থেকে মাদ্রাসাতে পড়লেও প্রকৃত মানুষ হওয়া যেত কমপক্ষে দিনশেষে স্বস্থির নিঃশ্বাস ছেড়ে নিশ্চিন্তে ঘুমানো যেত ও আল্লাহর অশেষ নেকী লাভ করা যেত | আফসোস যেন এখন সীমা অতিক্রম করে ফেলছে | যেকোনো সময় প্রেশার নিতে না পেরে আমরা ব্রেইন স্ট্রোক করতে পারি মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল পর্যন্ত বন্ধ হওয়ার উপক্রম এই দুশ্চিন্তা নামক বেড়াজালে বন্দি হয়ে |
#সব ভাইবোনদের কাছে একটাই অনুরোধ নিজের কথা না ভেবে সকল ছাত্রছাত্রীদের কথা ভাবুন ! আপনাদের কিছু মানুষের বিলাসবহুল চিন্তা হাজারো অসহায় ছাত্রছাত্রীর লুকানো শ্বাসরুদ্ধ কান্নার কারন হতে পারে | সবকিছু পর্যালোচনা করে সকলে যদি আমরা অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থার বিপক্ষে চলে যাই তাহলে মনে হয়না এ শোষণ মাথাউঁচু করে বেশিদূরপথ আগাবে | তাই আবেগের স্রোতে না ভেসে বিবেকবুদ্ধি দিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন এখনো সময় আছে সকলে একজোট হোন ! মনে রাখবেন “দশে মিলে করি কাজ , হারিজিতি নাহি লাজ ” আর শিক্ষাব্যবস্থার এই অন্যায় অত্যাচার খুবদ্রুত বন্ধ করুন আপনাদের কাছে হাত জোড় করছি একটু শান্তিমতো বাঁচতে দিন আমাদের ভুলত্রুটি করে কিছু বলে ফেললে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো
সকল স্টুডেন্টদের পক্ষ থেকে
শেখ কামরুল হাসান রিমন
ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি